ভোলার লালমোহন উপজেলায় চলতি বছর ২৩ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধতার কারণে এবছর কিছুটা দেরি হচ্ছে এই উপজেলায় আমন আবাদে। তবে এরমধ্যে জমি প্রস্তুত ও আমন রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লালমোহন ইউনিয়নে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর, চরভূতা ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৩০ হেক্টর, ধলীগৌরনগর ইউনিয়নে ৩ হাজার ৪৫ হেক্টর, লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, রমাগঞ্জ ইউনিয়নে ১ হাজার ৫৯০ হেক্টর, পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নে ২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর, ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নে ২ হাজার ২০ হেক্টর, বদরপুর ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর, কালমা ইউনিয়নে ৩ হাজার ১০০ হেক্টর এবং পৌরসভায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে এ বছর আমন আবাদ হবে।
এরমধ্যে রয়েছে উফশী জাতের; বিআর-১১, বিআর-২২, বিআর-২৩, ব্রি ধান-৪১, ব্রি ধান-৪৪, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান-৫২, ব্রি ধান-৭২, ব্রি ধান-৭৩, ব্রি ধান-৭৫, ব্রি ধান-৭৬, ব্রি ধান-৭৭, ব্রি ধান-৮৫, ব্রি ধান-৮৭, ব্রি ধান-৯৩ এবং ব্রি ধান-৯৫। এছাড়া স্বর্ণা জাতের- বিনা ধান-১৭ এবং বিনা ধান-২০। অপরদিকে লালমোহন উপজেলায় স্থানীয় জাতের কাজল শাইল, ঘিকজ, কালিজিরা, কালাকোরা, লোতর, টেপু এবং লেম্ভু ধান।
লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙাশিয়া এলাকার আমন চাষি মো. রুহুল আমিন বলেন, আমি গত বেশ কয়েক বছর ধরেই ধানের আবাদ করে আসছি। এবছরও ১৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধান আবাদের জন্য প্রস্তুত করেছি। এরইমধ্যে কিছু জমিতে ধানের চারা রোপণ শুরু করেছি। ধানের চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে জমিতে রোপণ সম্পন্ন করতে মোট ৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
ওই এলাকার মো. কামাল নামে আরেক চাষি জানান, প্রতিবছরই কম-বেশি জমিতে ধানের আবাদ করি। এবছরও ৪০ শতাংশ জমিতে ধানের আবাদ করবো। এরইমধ্যে চারা উৎপাদন ও জমি প্রস্তুত করে জমিতে চারা রোপণ শুরু করেছি। আশা করছি আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে রোপণ শেষ হয়ে যাবে। এতে মোট ১২-১৩ হাজার টাকার মতো খরচ হবে।
সরেজমিনে পরিদর্শন ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে যথাসময়ে আমন রোপণ করা সম্ভব হয়নি। এখন জমিতে জলাবদ্ধতা নেই। জমিকে উপযোগী করে আমন রোপণ শুরু করেছে। যা আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পুরো দমে জমিতে ধানের চারা রোপণ শেষ হয়ে যাবে বলে জানান কৃষকরা।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আবু হাসনাইন জানান, এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার কিছু কিছু এলাকার কৃষকদের বীজতলার চারা নষ্ট হয়েছে। যার জন্য চাষাবাদেও একটু দেরি হয়েছে। বর্তমানে পুরোদমে চারা রোপণ শুরু হয়েছে।
আশা করছি কৃষকরা তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং তারা আমাদের আমন আবাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রও পূরণ করবেন। এজন্য আমাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে মাঠে নিয়মিত কাজ করছেন।
টিএইচ